top of page

পায়ে পায়ে কানহা

Writer's picture: Ramit SenguptaRamit Sengupta

মানুসরূপী ছদ্মবেশে,

চলেছি এক অন্য দেশে-


বক্ষ করে দুরু দুরু,

পথ চলার হোলো শুরু।


কত নাম না জানা পাখি,

চমকে দিয়ে আঁখি-


রাস্তা সুধায় মোরে,

কানহার জঙ্গলে।


যেথায় বারাসিঙ্ঘার বাস,

মানুষ সমান ঘাস।


লুকিয়ে বিপদ তাতে,

দেখছে আঁড়ি পেতে-


সুযোগ পেলেই কাত,

করবে বাজিমাত।

 



আমাদের বেড়ানো আজকেই শেষ। রাত সাড়ে আট্টায় গণ্ডিয়া থেকে ট্রেন। তাই সকালটা Nature Trail করবো বলে ঠিক করলাম। আমাদের গাইড মনোজ, কাছেই কোন এক গ্রামে ওর বাড়ি, মুখে সবসময়ে একটা মিষ্টি হাসি লেগেই আছে। পরম যত্ন ও আগ্রহ নিয়ে আমাদের সে জঙ্গল দেখাতে লাগল। ও যে শুধু রাস্তা চেনে তা নয়, সব পাখি, গাছপালার নাম একেবারে মুখস্থ। কোনটা বারবেট, কোনটা স্কারলেট সব গড় গড় করে বলে চলেছে।


ওর কথামত ১০০ টাকা দিয়ে একটা দুরবিন ভাড়া করেছি, কখন কোথায় সেটা তাক করতে হবে ওই বলে দিচ্ছে। আর আমরা মহা আনন্দে ওর পিছু পিছু চলেছি।


Kanha Morning trail

গাড়ীর আওয়াজের বালাই নেই, তাই জঙ্গলের সব আওয়াজ আজ অনেক বেশি স্পষ্ট। হঠাত দূরে একটা সাম্বার ডেকে উঠল, মনোজ স্থির হয়ে বাঁদিকটা তাকাল, আবার হাঁটতে থাকল। আবার সেই ডাক। অনেকটাই দূরে, কিন্তু স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে দূরে কোথাও বাঘের উপস্থিতি টের পেয়েছে। তবে আগের দিনের মতো যেদিকে ডাক সেদিকে না গিয়ে অন্যদিকে পা-বাড়াল। আমার স্বশুরমশাই হটাত বলে উঠলেন যেদিকে ডাক আসছে সেদিকে গেলে কেমন হয়? হয়ত আবার দেখা হতে পারে বাঘের সাথে। কিন্তু না, আজ আমরা পায়ে হেঁটে এসেছি, বাঘ গাড়ির সাথে পরিচিত, পায়ে হাঁটা মানুষের সাথে নয়, তাই No Risk।


কিছুদুর যাওয়ার পরেই রাস্তার ডানদিকে দেখি অনেকগুলো সাম্বার, মহা আনন্দে ঘাস খাচ্ছে। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়েই তীর গতিতে ডানদিক থেকে বাঁদিক রাস্তা পেরোতে শুরু করল। একজন হঠাত গাছের আড়ালে দাড়িয়ে সোজা আমার দিকে তাকিয়ে। এ সুযোগ ছাড়া যায়ে? বেশ কটা ছবি ফ্রেম বন্দি করলাম। মনটা আনন্দে ভরে গেল। গাড়ির থেকে এরকম অ্যাঙ্গেল কখনই পাওয়া যেত না।


Sambar Deer at Kanha
একজন হঠাত গাছের আড়ালে দারিয়ে সোজা আমার দিকে তাকিয়ে।

সাম্বার গুলো বাদিকের জঙ্গলে ঢুকল ঠিকই, কিন্তু পরিস্কার দেখছি সেখান থেকে এগুচ্ছে না। মাথায় এল কিছুক্ষণ আগের ডাকটাও কিন্তু বাঁ দিকের থেকেই এসেছিলো। আর থাকতে না পেরে মনোজকে জিজ্ঞেস করলাম “হঠাত যদি হালুম করে সামনে এসে পরে তখন কি করবো?” সে বললো সেই সম্ভাবনা কম। কারন ভয় ওদেরও আছে। তাছাড়া আমরা চেষ্টা করছি অন্য রাস্তা দিয়ে আওয়াজ করে করে যেতে, যাতে সাক্ষাত এড়ানো যায়। সে না হয় বুঝলাম, কিন্তু কিছু টিপস দিন। আপনি তো এখানকার লোক, আগেও নিশ্চয়ই দেখা হয়েছে শ্রীমানের সাথে।


আমাদের গাইড। আদিবাসী অকুতোভয় মনোজ।


মুচকি হেসে মনোজ বল্লো “একেবারে এক- দুহাত তফাতে সাক্ষাত হলে আপনার আর কিছু করার দরকার নেই, যা করার উনিই করবেন”।


ছোকরা বলে কি? ইয়ার্কি হচ্ছে।


পাশ থেকে শ্বশুর বললেন- কি রমিত তোমাকে বলেছিলাম না জঙ্গলে হেঁটে যাওয়ার এক আলাদাই মজা আছে।

ওনার খুব মজা লেগেছে বুঝলাম।


যে মানুষ কেউটে কামর খেয়ে বেঁচে ফিরেছে, বুনো হাতির তাড়া খেয়েছে তার কাছে মজা লাগাটাই স্বাভাবিক। এদিকে আমার তো আত্মারাম খাঁচাছাড়া হবার জোগাড়।


Nature Trail at Kanha
শ্রী বিস্ববন্ধু দাস ও তার পুত্র অভ্রনীল দাস

কোনমতে হেসে বললাম । বাবা আপনার ছেলে মেয়ে দুজনেই দাড়িয়ে গেছে, আমারগুলো এখনো দুধের বোতল ছাড়েনি, কিছু মজা না হয় পরেই করতাম।

মনে মনে একটা ফন্দি আঁটলাম। বাঘ না হয় দুই পা ওয়ালা জন্তু দেখেনি, চার পা ওয়ালা তো দেখেছে, সাক্ষাত হলে না হয় হামাগুড়ি দেব। বাঙ্গালির বুদ্ধি, ঠেকায়ে কার সাধ্যি। দেখি বেটা কি করে।

যাইহোক সে যাত্রায়ে শ্রীমানের সহিত আর সাক্ষাত হয় নি। কিন্তু তার উপস্থিতি ঠারে ঠারে টের পেয়েছিলাম।


 

Click the below image for more pictures of Kanha...

Photo album link
Photo album link

Want to know more about the forest? Click below for Forest Talks on Kanha

Forest Talk links for Kanha
Forest Talk links for Kanha

Comments


1.jpg
About Me

Ordinary Banker who loves to click while traveling, just to preserve golden memories of the past.

Read More

Join My Mailing List
  • White Facebook Icon
Meet me on social platform
bottom of page